Monday, July 9, 2012

Love Story...

“সুপ্ত ভালবাসা”

আমি “কল্পনা”, কোন সূচনা এবং ভঙ্গিমা ছাড়ায় আমি সরাসরি আমার কাহিনী টা লিখে ফেললাম। 
এই কাহিনীর শুরুটা ২০০৯ এর প্রথম দিকে, আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ভর্তি হলাম। যাই হোক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস সব সময়ই খুব স্পেশাল থাকে তাই আমার জন্যও তেমনই ছিল, সেদিনই আমার “সুপ্তর” সাথে প্রথম দেখা। দেখা মানে সেরকম দেখা না, আসলে আমি ওকে ক্লাস এ দেখালাম। প্রথম দেখার পর আমার মনে যেই কথাটা আসল তা হল কোন ছেলের চোখ কিভাবে এত সুন্দর আর মায়াবী হয়? তো এইভাবে বেশ কিছু ক্লাস পার হয়ে গেল। এইদিকে সুপ্ত, আকাশ, মিলা, রূপা আমরা সবাই খুব ভাল বন্ধু হয়ে গেলাম। আমরা সবাই একসাথেই থাকতাম বেশী ভাগ সময়, আর জগত সংসারে যত গল্প আছে বসে বসে তাই করতাম। শুধু একজন কিছুই বলতো না। খালি বসে বসে শুনত। আর সেইটা হচ্ছে সুপ্ত। সুপ্তর সাথে যত মিশতে লাগলাম ততো ওকে ভাল লাগতে লাগলো। আমার একটা ব্যাপার ছিল যে আমি কখনও রাতে ফোনে কথা বলতাম না। একদিন রাতে সুপ্ত আর আকাশ কল কনফারেন্স করে আমাকে ফোন দিল। যখন আমি বললাম আমি রাতে ফোনে কথা বলি না আমার বাসায় সমস্যা আছে তখন আর কেউ ফোন দিত না রাতে, একদিন রাতে কি মনে হল জানিনা, আমি নিজে থেকেই সুপ্তকে ফোন করলাম আর অনেক সময় ধরে কথাও বললাম। তারপর থেকে যেন আর আমাদের কথা শেষ হয় না। যতক্ষণ বাসায় থাকতাম হয় ইয়াহু ম্যাসেঞ্জার আর না হয় মোবাইলে যোগাযোগ চলত। প্রায়ই বড় বোনের কাছে বকা খেতাম ফোনে এত কথা বলার জন্য। আর অনেক কারণেই আপুর কাছে বকা খেতাম আর অনেক মন খারাপ হত। তখন সুপ্তর কাছে অভিযোগ করতাম আর ও ইয়াহু ম্যাসেঞ্জার এ হ্যাপি ইমো দিয়ে আর জোক বলে আমার মন ভাল করে দিত। একদিন ভার্সিটির লবিতে বসে সবাই গল্প করছিলাম। আড্ডা চলতে চলতে একসময় ভালবাসা নিয়ে কথা উঠল। কে প্রেম করে, কার প্রেমের অনুভূতি কেমন এইসব। হঠাৎ করে মিলা সুপ্ত কে জিজ্ঞেস করে বসল, কিরে তুই প্রেম করিস?? সুপ্ত বলল হ্যাঁ করিত। আমার গার্ল ফ্রেন্ড আছে, মেডিকেলে পড়ে, আমাদের ১ বছরের প্রেম। কথাটা শোনার পর যেন নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমি। আমি সেই আড্ডা তে আর একটা কথাও বলতে পারিনি। আমি বাসায় আসার পর অনেক অনেক ভাবলাম, আর বুঝতে পারলাম যে আসলে আমারই ভুল ছিল আমি কখনো ওকে এই বেপারে কিছুই জিজ্ঞাসা করি নি। হয়ত সেজন্যই ও আমাকে কখনো কিছু বলে নি। তারপর বিভিন্ন কারণে আমাদের মধ্যে বেশ একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল হয়ত ওর গার্ল ফ্রেন্ড আছে এইটাই প্রধান কারণ ছিল। পরের সেমিস্টারে ওর সাথে কোন ক্লাস মিলল না আমার, তাই ওর সাথে আমার দেখাও হত না। হয়ত এই ক্লাস না মেলার পিছনে আমার অনিচ্ছা ছিল।
তখন আমার পরিচয় “উৎসর” সাথে হল, ওর সাথে আমার সব ক্লাস ছিল সারাদিন ওর সাথে থাকতে থাকতে দুজনের ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গেল, আমি ওকে সুপ্তর বেপারে তেমন কিছুই বলি নি শুধু বলেছিলাম সুপ্ত আমার খুব ভাল বন্ধু, একদিন এ কথা সে কথা তে উৎস আমাকে বলল আজ ও সুপ্ত কে একটা মেয়ের সাথে দেখেছে। আমি বললাম হয়ত ওটা সুপ্তর গার্ল ফ্রেন্ড। উৎস বলল, ও আমি ভেবেছিলাম সুপ্তর কোন গার্ল ফ্রেন্ড নাই। আমি বললাম, ও একটু কম কথা বলে আর সবার সাথে নিজের সব কথা বলতে পছন্দ করে না। এভাবেই নিজের মধ্যে নানা রকম যন্ত্রণা সহ্য করে দিন কাটাতে লাগলাম। এইদিকে উৎস একদিন আমাকে ওর সাথে প্রেম করার প্রস্তাব দিল। আমি অবাক হলাম কিন্তু আমি কিছুই বললাম না। কিন্তু সে এইটাকে আমার সম্মতি বলেই ধরে নিলো যে আমি ওকে ভালোবাসি। সে সারা ক্যাম্পাসে এটা ছড়িয়ে দিল। আমি একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেলাম। আমি যখন সরাসরি উৎসকে নিষেধ করে দিলাম তখন সে এটা মানতে রাজী হল না না। আমি কি করব না ভেবে পেয়ে ওকে নানা ভাবে বুঝাতে লাগলাম আমাদের মধ্যে সম্পর্ক হওয়া সম্ভব নয়। উৎস আমাকে ভয় লাগানোর চেষ্টা করতে লাগল। আমি আমার সব বন্ধুকে বললাম উৎসকে বুঝিয়ে বলতে, তখন ভাবলাম সুপ্তকেও বেপারটা জানাই। তখন নিজেকে খুব স্বার্থপর মনে হচ্ছিলো যে কেন এতদিন ওর কোন খোজ খবর আমি নেইনি। কিন্তু তারপর ও ওকে ফোন করলাম এবং আমি সুপ্তর গলা শুনে চমকে গেলাম। মনে হচ্ছিল ও খুব অসুস্থ। আমি জানি ওর বেপারে আমি কিছু জিজ্ঞাসা করলেও ও আমাকে কিছুই বলবে না কারণ ওর ইগো খুব বেশি। তাই আমি আমার সমস্যার কথা বলে ওর কাছে হেল্প চাইলাম, ও বলল দেখি কি করতে পারি। তারপর উৎসকে সবাই বোঝালো, সে কি বুঝল আমি জানি না কিন্তু ও আর আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করত না। সুপ্তর সাথে আমার সম্পর্কটা আবার সুন্দর হয়ে উঠল। ভালই চলতে লাগলো আমাদের পুরনো বন্ধুত্ব।
তার কিছু দিন পর কথায় কথায় আমি সুপ্তর কাছে থেকে জানতে পারি ওর গার্ল ফ্রেন্ড এর বিয়ে হয়ে গেছে। আমি জানি আমার বন্ধুর এমন সংবাদে আমার দুঃখ পাওয়া উচিৎ। কিন্তু আমি জেনে সেদিন মনে মনে কি পরিমাণ খুশি হয়েছিলাম তা আসলেই বলার মত। কিন্তু একটা মুখে একটা গম্ভীর ভাব ধরে ওকে সান্ত্বনা দিয়েছিলাম। আমি অনেক ভেবেছি ওকে বলে দিব আমার মনের কথা, কিন্তু গত দুই বছরেও সেই কাজটা এখনও করতে পারিনি। একটায় ভয়, আমি ওকে আমার অনুভূতির কথা বলার পর ও যদি বলে আমি তোকে ভালবাসতে পারব না তাহলে আমি কি করব? তাই ভাবি এইতো বেশ আছি। কি দরকার আছে কাছে যেতে চেয়ে দূরে চলে যাওয়ার? ভালোবাসায় পূর্ণতা সবসময় সুখের নাও হতে পারে। অপূর্ণতাও অনেকসময় অনেক সুখ দেয়।



"Read more love story click here"

No comments:

Post a Comment